বনাঞ্চলের প্রাণী

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-বনাঞ্চলের প্রাণী।যা “বন ও বনাঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণী” এর অন্তর্ভুক্ত।

বনাঞ্চলের প্রাণী

 

বনাঞ্চলের প্রাণী

 

শচীন্দ্রলাল মিত্র “বাংলার শিকার প্রাণী” শীর্ষক গ্রন্থে পরিশিষ্টে বাংলাদেশ অঞ্চলে প্রাপ্য প্রাণীর একটি তালিকা সংযোজন করেছিলেন। গ্রন্থটি ১৯৪০ সালে মুদ্রিত হয়। দ্বিতীয় মুদ্রণ হয় ১৯৫৭ সালে। এই গ্রন্থটিকে ভারতীয় বন্যপ্রাণী সম্পর্কে বিশ্বস্ত দলিল হিসেবে সবাই স্বীকার করেন। এই গ্রন্থ অনুযায়ী প্রাণীর তালিকা এরকম :

ঢাকা—বাঘ, চিতাবাঘ, সাম্বার, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, শূকর, ময়ূর ও বনমোরগ। বর্তমানে ঢাকা জেলায় বাঘ, চিতাবাঘ, সাম্বার, চিত্রা হরিণ ও ময়ূর নেই। মায়া হরিণের,অবস্থাও আশংকাজনক।

মোমেনশাহী—–বাঘ, চিতাবাঘ, সাম্বার, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, শূকর, গুইসাপ, হরিয়াল, নানা ধরনের হাঁস, বক ও কাদাখোঁচা।

ময়মনসিংহে কিছু মায়া হরিণ, শূকর ও বনমোরা ছাড়া আর কোনোটির অস্তিত্ব নেই।

খুলনা—বাঘ, চিতাবাঘ, চিত্রা হরিণ, ভোদর, উদবিড়াল, সজারু, বনমোরগ, হরিয়াল, কুমির, গুইসাপ ও নানান জাতের সাপ।

খুলনায় চিতাবাঘ ছাড়া অন্য সব প্রাণী আছে। 

 

 

বনাঞ্চলের প্রাণী

 

ফরিদপুর-–গুইসাপ ও বানর।ফরিদপুরে গুইসাপ ও বানরের সংখ্যা বর্তমানে বেশ কম।

বাখরগঞ্জ—বাঘ, চিতাবাঘ, চিত্রা হরিণ ও শুরুর।

বাখরগঞ্জ মানে বর্তমানের বৃহত্তর বরিশাল জেলা। এখানে বর্তমানে এর কোনোটি নেই। চট্টগ্রাম—হাতি, গৌর, সাম্বার, মায়া হরিণ, শূকর, বাঘ, চিতাবাঘ, বনমোরগ, মথুরা ও বিভিন্ন জলন্তর পাখি।

চট্টগ্রাম বলতে বৃহত্তর চট্টগ্রাম বোঝানো হয়েছে। গৌর ও বাঘ চট্টগ্রাম বনাঞ্চল থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

নোয়াখালি—বড় ধরনের প্রাণী ছিলো না।বর্তমানে শিয়াল, বনবিড়াল, বাগডাসা ও নকুল ইত্যাদি কিছু দেখা যায়। দ্বীপাঞ্চলে প্রচুর শীতের পরিযায়ী পাখি আসে শীত মৌসুমে। 

পার্বত্য চট্টগ্রাম—গণ্ডার, হাতি, গৌর, সাম্বার, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, বাদিহাস বনমোরগ ইত্যাদি।এখানে বর্তমানে গৌর ও গণ্ডার নেই। 

রাজশাহী—গুইসাপ, রাজহাঁস ও হাঁস।গুইসাপ সংখ্যায় অনেক কমে গেছে। 

দিনাজপুর—শূকর ও চিতাবাঘ।বর্তমানে নেই।

রংপুর—চিতাবাঘ, খরগোশ ও জলচরী পাখি।বর্তমানে নেই।

বগুড়া—বিশেষ কোনো প্রাণীর উল্লেখ নেই। তবে শীতের পাখির উল্লেখ আছে। পাবনা-চিতাবাঘ, শূকর ও বিভিন্ন পাখি।বর্তমানে নেই।

 

বনাঞ্চলের প্রাণী

 

বনাঞ্চলে যে সকল পাখি পাওয়া যায় তাদের মধ্যে প্রধানত দেখা যায় দোয়েল, পানকৌড়ি, লাল কাক, কোঁচ বক, গোবক, ধড় বক, করচে বক, বাচকা, শামুক-ঘোর, মদন টাক শঙ্খচিল, টিট্রিক্স, ছোট গুলিন্দা, জৌরালি, কাঠিঘুঘু, ঘুঘু, টিয়া, করো, তালবাতাসী, ফটকা, কাঠঠোকরা, আবাবিল, বাঁশপাতি, গোশালিক, ঝুটশালিক, দাঁড়কাক, কাবাসী, বড় কাবাসী, ফটিকজল, বুলবুল, চাক দোয়েল, টুনটুনি, দুর্গা টুনটুনি, চশমা পাখি, চড়াই, শ্যামসুন্দর, ফিঙে, মাছরাঙা, শকুন, চিল ইত্যাদি।

বাংলাদেশের বনাঞ্চলে নানা জাতের বানর ও হনুমান রয়েছে ও সাপ রয়েছে। বানরের মধ্যে রেসাস বানরই প্রধান। সাপের মধ্যে শঙ্খচূড়, গোখরা, অজগর, ইত্যাদি প্রধান।

এ প্রসঙ্গে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিলুপ্তপ্রায় বা বিপন্ন উদ্ভিদ ও মেরুদণ্ডী প্রাণী প্রজাতি সম্পর্কিত বিবরণ সারণি ১৫-এ দেখানো হলো।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment