জনসংখ্যা বৃদ্ধি

আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়-জনসংখ্যা বৃদ্ধি।যা “বন ও বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণ” এর অন্তর্ভুক্ত।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি

 

জনসংখ্যা বৃদ্ধি

 

১৯৮৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের হিসেব মতে বাংলাদেশের মোট ২০ লক্ষ হেক্টর বনাঞ্চলের অর্ধেকেরও কম অংশে গাছগাছড়া নেই। প্রতি বছর আর্ট হেক্টর জমি অর্থাৎ বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১২ কোটির বেশি। দেশ বিভাগের সময় অর্থাৎ ১৯৪৭ সালে জনসংখ্যা ছিলো এর এক তৃতীয়াংশ।

লোক সংখ্যা বেড়েছে, দেশের আয়তন তো বাড়েনি। ফলে বাড়তি জনসংখ্যার চাপ পড়েছে বনাঞ্চলের উপর। বন কেটে গড়ে উঠেছে মানুষের ঠাঁই, বসতভিটে। এর পর বন পরিণত হয়েছে চাষের জমিতে। নইলে আহার জুটবে কি করে ঘরদোর নির্মাণ ও আসবাবপত্র এবং জ্বালানির জন্য কাঠের উৎসও একমাত্র এই বনাঞ্চল।

এ সমস্যা শুধু বাংলাদেশেরই নয়। সারা বিশ্ব জুড়ে যে জন বিস্ফোরণ ঘটছে, তার প্রমাণ সারণি ১২-এ দেখানো হলো, উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী জনবিস্ফোরণ বনাঞ্চল ধ্বংসের অন্যতম কারণ হিসেবে স্বীকৃত। সারণি ১৩-এ পৃথিবীর কতিপয় দেশের নগরবাসীর সংখ্যা দেখানো হলো।

 

জনসংখ্যা বৃদ্ধি

 

১৯৪৭ সালের আগে জমিদারেরা ছিলেন বনাঞ্চলের মালিক। জমিদারি প্রথা বিলোপ করার ঠিক পূর্বমুহূর্তে স্থানীয় অধিবাসীরা বনাঞ্চলের খণ্ড খণ্ড জমি পত্তন নিয়েছে বলে জানায়। বিশেষ করে শাল প্রধান খোলা বন অঞ্চলেই এ রকমটি ঘটেছে বেশি।

বনাঞ্চলে বসতবাটি নির্মাণ করার পর বসবাসকারীরা ক্রমে অল্প অল্প বনভূমি কেটে নিজেদের সীমানা বাড়িয়ে নেয়। এ ছাড়া ভুয়া কাগজপত্র দলিল দস্তাবেজের সাহায্যে বনাঞ্চল গ্রাস করেছে নির্বিচারে ব্যাপকভাবে। পূর্বে বলা হয়েছে ১৯৮৭ সালের সরকারি জরিপ অনুযায়ী প্রতি বছর আট হেক্টর বনভূমি লোপাট হয়ে যাচ্ছে।

১৯৮৬ সালের FAO-এর প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, মাথা পিছু জ্বালানি কাঠ ব্যবহৃত হতো ২.৭ ঘনফুট ও অন্যান্য প্রয়োজনে ব্যবহৃত হতো ০.৩ ঘনফুট কাঠ। যদিও কাঠ ব্যবহারের দিক থেকে পৃথিবীতে এটিই সর্বনিম্ন হার।

ধারণা করা হচ্ছে ২০১০ সালে এই হার যথাক্রমে ৪৩ ঘনফুট ও০০৮ ঘনফুটে দাঁড়াবে। তাহলে কাঠের দুষ্প্রাপ্যতার চিত্র কি পরিমাণ প্রকট তা ভাবতেও কষ্ট হয়। উত্তরাঞ্চলে জ্বালানির জন্যে কাঠের বিকল্প নেই।

অথচ এই অঞ্চলে বনভূমি রয়েছে একেবারেই কম পরিমাণে। বনায়নও বেশি হচ্ছে না। মাটির নিচে পানির স্তরও অনেক গভীরে। কাজেই পরিকল্পিত বনাঞ্চল গড়ার জন্যে যে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ও প্রকৌশল আবশ্যক সেদিকে খুব একটা দৃষ্টি দেওয়া হয়নি।

পরিণতিতে রংপুর, দিনাজপুর ও রাজশাহী এলাকায় মরুবিস্তারের লক্ষণ সুস্পষ্ট। বাংলাদেশে যে পরিমাণ বৃক্ষ নিধন হয় এর শতকরা ৯৫ ভাগই ব্যবহৃত হয় জ্বালানি হিসাবে।

 

জনসংখ্যা বৃদ্ধি

 

নগরের আশেপাশে, নদীকে ঘিরে গড়ে উঠছে শিল্প-কলকারখানা ব্যাপকহারে। স্থাপিত হচ্ছে শিল্পনগরী। দালান-কোটা, শিল্প-কারখানা নির্মাণের জন্যে ইটের ভাটা গড়ে ওঠছে শত শত। এতে প্রচুর পরিমাণ জমি বিনষ্ট হচ্ছে। বনাঞ্চল থাকলে তাও ধ্বংস হচ্ছে।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment